প্রতীকী ছবি
রাজধানী ঢাকার সরকারি প্রাইমারি স্কুলে নারীদের প্রাধান্য এতটাই বেশি যে, শতাধিক স্কুলে এক জনও পুরুষ শিক্ষক নেই। নিয়োগের ক্ষেত্রে নারীদের ৬০ শতাংশ কোটা এবং বদলিতে নারীদের প্রাধান্য থাকায় এমনটি হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা মহানরীতে ৩৪২টি সরকারি প্রাইমারি স্কুল রয়েছে। এর মধ্যে মোট শিক্ষকের সংখ্যা ৩ হাজার ৫০৯ জন। যার মধ্যে নারী শিক্ষক ২ হাজার ৯৬০ জন। সে হিসাবে মাত্র ১৫ শতাংশ পুরুষ শিক্ষক ঢাকায়। আর প্রধান শিক্ষকের ক্ষেত্রেও একই চিত্র। ৩৪২ জন প্রধান শিক্ষকের মধ্যে মাত্র ৫০ জন পুরুষ।
ঢাকার মিরপুর থানায় ৪২টি সরকারি প্রাইমারি স্কুল রয়েছে। এর মধ্যে পল্লবী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কল্যাণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৭ জন করে শিক্ষক ও এক জন করে প্রধান শিক্ষক রয়েছেন। যার প্রত্যেকেই নারী শিক্ষক। একই থানার পাইকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২৫ জন শিক্ষক রয়েছেন, যারা সবাই নারী শিক্ষক। এই থানার ৪২টি স্কুলের মধ্যে ১২টি স্কুলে এক জনও পুরুষ শিক্ষক নেই।
মোহাম্মদপুর থানাধীন ২৩টি সরকারি স্কুল রয়েছে। এর মধ্যে ১১টি স্কুলে কোনো পুরুষ শিক্ষক নেই। এই থানার বরাবো মোহনপুর সরকারি প্রাইমারি স্কুলে ১৭ জন, লালমাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৯ জন, আবুল বাশার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১১ জনের সবাই নারী শিক্ষক। ধানমন্ডি থানাধীন ১১টি সরকারি প্রাইমারি স্কুল রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটিতে পুরুষ শিক্ষক নেই। ধানমন্ডি ১ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৪ জন, ধানমন্ডি ২ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৬ জনের সবাই নারী।
কর্মকর্তা বলেছেন, বদলি হয়ে সবাই ঢাকায় আসার প্রবণতা বেশি। এক্ষেত্রে নারীরা বেশি বদলি হয়ে আসেন। স্বামীর কর্মস্থল ঢাকায় বা বিভিন্ন প্রভাব খাটিয়ে তারা ঢাকায় বদলি হয়ে আসেন। স্ত্রীর কর্মস্থল ঢাকায় দেখিয়ে স্বামী বদলি হয়ে ঢাকায় আসেন। এমন সংখ্যা খুব একটা নেই বা নেই বললেই চলে। এসব কারণে ঢাকায় নারী শিক্ষকের সংখ্যা অনেক বেশি। তবে এ অবস্থার পরিবর্তন দরকার। সারা দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব স্কুলে ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৯৪৯ জন শিক্ষক রয়েছেন। এর মধ্যে নারী শিক্ষক ২ লাখ ৪৯ হাজার ৪২ জন, যা মোট শিক্ষকের ৬৫ শতাংশ।
আরো পড়ুন: সুনামগঞ্জের হাওরে ধান কাটার ধুম
সুলতানা নামে এক শিক্ষক বলেন, নিয়োগেই শুধু নারীদের প্রাধান্য তা নয়, বদলির ক্ষেত্রেও নারীদের প্রাধান্য আছে। ঢাকায় বেশিসংখ্যক নারী বদলি হয়ে আসেন। এ কারণে গ্রাম বা মফস্সলের স্কুলগুলোতে কোথাও কোথাও নারীদের চেয়ে পুরুষ শিক্ষকের সংখ্যা বেশি হয়ে থাকে।
নীতিমালায় বলা আছে, ‘প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ থানা কোটাভিত্তিক। এই বিধিমালার অধীন সরাসরি নিয়োগযোগ্য পদের ৬০ শতাংশ মহিলা প্রার্থীগণের দ্বারা, ২০ শতাংশ পোষ্য প্রার্থীগণের দ্বারা এবং অবশিষ্ট ২০ শতাংশ পুরুষ প্রার্থীগণের দ্বারা পূরণ করা হবে; এবং এ নির্ধারিত কোটার শিক্ষকগণের মধ্যে প্রত্যেক ক্যাটাগরিতে অবশ্যই ২০ শতাংশ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রিধারী প্রার্থীগণের নিয়োগ নিশ্চিত করিতে হবে : তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপে ২০ শতাংশ কোটা পূরণ না হলে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান করা যাবে।’
এম/