ছবি: সংগৃহীত
লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে আরাফাত প্রান্তর। আজ মঙ্গলবার (২৭ জুন) পবিত্র হজ। মুসলিম সম্প্রদায়ের বৃহৎ মিলনমেলা। বড়-ছোট, ধনী-গরিব, সাদা-কালো কোনো ভেদাভেদ নেই আজ। সব ভেদাভেদ ভুলে শুধু দুই খণ্ড সাদা কাপড় শরীরে জড়িয়ে সবাই একত্রিত হয়েছে আরাফার ময়দানে।
সবার মুখেই একই ধ্বনি লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ‘আমি হাজির, হে আল্লাহ, আমি হাজির।’ লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক ‘হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই।’ ইন্নাল হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক লা শারিকা লাক ‘সব প্রশংসা ও নেয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার, তোমার কোনো শরিক নেই’।
সারাবিশ্ব থেকে আজ ২৫ লাখেরও বেশি মুসলমান আরাফার ময়দানে হাজির হয়েছেন।
মিনা থেকে আরাফাতের ১৪ কিলোমিটারের বেশি দূরত্ব পাড়ি দিতে ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ বাস। অনেকেই গিয়েছেন পায়ে হেঁটে। হাসপাতালে ভর্তি অসুস্থ হাজিদেরও কিছু সময়ের জন্য অ্যাম্বুল্যান্সে করে এখানে আনা হবে।
দুপুরে মসজিদে নিমরায় হজের খুতবার মাধ্যমে শুরু হবে মূল আনুষ্ঠানিকতা। উপস্থিত হাজিদের উদ্দেশে মসজিদে নামিরা থেকে খুতবা পড়বেন শায়খ ইউসুফ বিন মুহাম্মদ।
হাজিরা আরাফাতের ময়দানে জোহর ও আসর নামাজ পড়বেন। এরপর সূর্যাস্ত পর্যন্ত দোয়া-মোনাজাতে মগ্ন থাকবেন। সূর্যাস্তের পর সবাই মুজদালিফার উদ্দেশে গমন করবেন। সেখানে মাগরিব ও এশার নামাজ পড়ে রাত কাটাবেন। মুজদালিফা থেকে তিন জামারার জন্য তারা পাথর সংগ্রহ করবেন।
পরদিন মিনায় বড় জামারায় গিয়ে পাথর ছুড়বেন। এরপর কোরবানি দিয়ে মাথার চুল ছোট বা মুণ্ডন করবেন। তখন ইহরামের কাপড় বদলে স্বাভাবিক পোশাক পরে মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে পবিত্র কাবা শরিফ সাতবার তাওয়াফ করবেন। কাবার সামনের দুই পাহাড় সাফা ও মারওয়ায় সায়ি (সাতবার দৌড়ানো) করবেন। সেখান থেকে তারা আবার মিনায় যাবেন। মিনা থেকে তিন দিন (বড়, মধ্যম, ছোট) ২১টি করে ৬৩টিসহ মোট ৭০টি পাথর জামারায় নিক্ষেপ করবেন। এরপর মক্কায় বিদায়ি তাওয়াফ করে হজের সব কাজ শেষ করবেন।
রোববার মক্কায় তাওয়াফ আল কুদুমে অংশ নেয়ার পর, মিনায় সমবেত হন হাজিরা। সোমবার সারাদিন এখানেই বিভিন্ন তাঁবুতে অবস্থান করেন তারা। আগামীকাল সৌদি আরবে পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আযহা।
সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, করোনার পর এবারই প্রথম বিশ্বের ১৬০টির বেশি দেশ থেকে ১৬ লাখ ৫৫ হাজার ১৮৮ হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছান। আর সৌদি আরবের ভেতর থেকেও বিপুলসংখ্যক লোক হজ করছেন।
এ বছর বাংলাদেশ থেকে হজ পালন করতে এক লাখ ২২ হাজার ৮৮৪ জন সৌদি আরব গেছেন। গত ২১ মে থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত ৩২৫টি ফ্লাইটে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ২৬ হজযাত্রী মক্কা ও মদিনায় মারা গেছেন। বাংলাদেশি হজযাত্রীদের ফিরতি ফ্লাইট আগামী ২ জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।
ওআ/ আইকেজে
খবরটি শেয়ার করুন