শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৪৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা উপেক্ষা করে শয়তানকে পাথর মারছেন হাজিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৮:২৮ অপরাহ্ন, ২৮শে জুন ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পুড়ছে সৌদির মক্কা শহর। গায়ে ফোস্কা পড়া এই তাপ উপেক্ষা করেই মিনায় শয়তানকে পাথর মারছেন হাজিরা

মরু আবহাওয়ার দেশ হওয়ায় প্রতিবছর জুন-জুলাই মাসে সাধারণভাবেই এই পরিমাণ তাপমাত্রা ওঠে সৌদিতে। যা হাজীদের জন্য কিছুটা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে তীব্র গরম থেকে হাজিদের রক্ষা করতে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে সৌদি প্রশাসন।

হজযাত্রীরা বিশ্বাস করেন, তীব্র এই গরম হজ করতে আসা লোকজনের হজের পুণ্য আরও বৃদ্ধি করবে। তাদেরই একজন আবু আল আসাদ। ব্রিটেন থেকে হজ করতে আসা ৪৮ বছর বয়সী এই হজযাত্রী এএফপিকে বলেন, ‘হজ করা এত সহজ নয়। যদি তাই হতো, তাহলে যে কেউ হজ করতে পারত।’

গত সোমবার (২৬ জুন) হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এদিন কাঠফাঠা রোদের মধ্যে পুরোটা সময় কার্যত মিনার খোলা আকাশের নিচে কাটান হজযাত্রীরা। পরদিন মঙ্গলবারও (২৭ জুন) প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করেন তারা।

এদিন স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে ১২টায় (বাংলাদেশ সময় সাড়ে ৩টায়) মসজিদে নামিরা থেকে হজযাত্রীদের উদ্দেশে খুতবা দেয়া হয়। সূর্যাস্ত পর্যন্ত তারা আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে জিকির-আসকার ও ইবাদতে মশগুল ছিলেন। মঙ্গলবার রাতে তারা মুজদালিফায় অবস্থান করেন।

বুধবার (২৮ জুন), ১০ জিলহজ ভোরের আলো ফুটতেই মিনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন হাজিরা। তবে দিনের আলোর সঙ্গে বাড়তে থাকে তাপমাত্রাও। এদিনও তামপমাত্রা পৌঁছায় ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

তবে হজ যাত্রীরা গরম উপেক্ষা করে সেখানে জামারায় প্রতীকী শয়তানকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়ছেন। এরপর মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় মিনায় পশু কোরবানি দেবেন তারা।

সৌদি প্রশাসন থেকেও গরম কমাতে নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। বিনামূল্যে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। হাজিদের সুবিধার্থে মক্কায় কাবা শরিফের বাইরে রাস্তার গরম কমাতে ছিটানো হচ্ছে পানি। হিটস্ট্রোক ও অন্য অসুস্থতায় আক্রান্তদের চিকিৎসায় ৩২ হাজারের বেশি স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োজিত রাখা হয়েছে।

সৌদি আরবের পরিসংখ্যান ব্যুরো জানিয়েছে, এ বছর ১৫০টিরও বেশি দেশের ১৮ লাখ ৪৫ হাজার ৪৫ জন পুরুষ ও নারী হজ করেছেন। যারমধ্যে বিদেশি ছিলেন ১৬ লাখ ৬০ হাজার ৯১৫ জন। সৌদির হাজি ছিলেন ১ লাখ ৮৪ হাজার ১৩০ জন। হাজিদের মধ্যে পুরুষ ছিলেন ৯ লাখ ৬৯ হাজার ৬৯৪ জন। নারী ছিলেন ৮ লাখ ৭৫ হাজার ৩৫১ জন।

এ বছর আরব বিশ্ব থেকে হজ করতে গেছেন ৩ লাখ ৪৬ হাজার ২১৪ জন। এশিয়ার দেশগুলো থেকে গেছেন ১০ লাখ ৫৬ হাজার ৩১৭ জন। আফ্রিকার দেশগুলো থেকে গেছেন ২ লাখ ২১ হাজার ৮৬৩ জন। অপরদিকে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া এবং অন্যান্য অঞ্চলের ৩৬ হাজার ৫২১ জন হাজি হজ করেছেন এ বছরে।

২০২০ সালে করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ায় বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করে সৌদি আরব। যার ফলে ওই বছর মাত্র ১০ হাজার মানুষ হজ করার সুযোগ পান। এরপর ২০২১ সালে ৫৯ হাজার আর ২০২২ সালে প্রায় ১০ লাখ মানুষ হজ পালন করেন।

আরো পড়ুন:সৌ দিসহ মধ্যপ্রাচ্যে পালিত হচ্ছে ঈদুল আজহা

তবে চলতি বছরে করোনা বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার কারণে হজে সর্বোচ্চ সংখ্যক হাজি উপস্থিত হবে বলে প্রত্যাশা করা হয়েছিল। ধারণা করা হয়েছিল এটিই হবে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজ।

সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, তাদের প্রত্যাশা ছিল এ বছর ২৫ লাখেরও বেশি মানুষ পবিত্র হজব্রত পালন করবেন। যা হবে নতুন ইতিহাস।

এম/


Important Urgent

খবরটি শেয়ার করুন