ছবি: সংগৃহীত
দেশের হাসপাতালগুলোর চিকিৎসা বর্জ্যকে ঘিরে কোটি কোটি টাকার অবৈধ ব্যবসায় জড়াচ্ছেন স্বার্থান্বেষী কিছু মহল। এসব ক্ষতিকর বর্জ্য রীতিমতো বেচাকেনা হচ্ছে বিভিন্ন ভাঙারির দোকানে। একেবারে দিনে-দুপুরে চোখের সামনে এসব অবৈধ কাজ চললেও দেখার যেন নেই কেউ।
তথ্যমতে, রাজধানীর বেড়িবাঁধের একটি ভাঙারির দোকানে খোলা অবস্থায় মেডিকেল বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা গেছে। দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল থেকে আসছে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিসম্পন্ন এসব বর্জ্য। রক্তমাখা স্যালাইনের পাইপ, ধারালো সুই, প্লাস্টিক ব্যাগসহ সব একসঙ্গে ভাঙা হচ্ছে এক মেশিনেই। পরে এগুলো দিয়েই তৈরি করা হবে বিভিন্ন প্লাস্টিক সামগ্রী।
ভাঙারি দোকানীরা বলছেন, দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে টাকার বিনিময়ে খুব সহজেই মিলছে এসব জিনিস। কেজিপ্রতি যার দাম ৫০ থেকে ৮০ টাকা, ক্ষেত্রে বিশেষে তারও বেশি। আর এসব কথার সত্যতাও মেলে খোদ রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের এক পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কথায়। তবে, হাসপাতালটির পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল কাজী মো. রশীদ-উন-নবী নিজে অবশ্য মেডিকেল বর্জ্য বাইরে বিক্রির বিষয়ে অবগত নন।
তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে মেডিকেল বর্জ্য নিয়ে বাইরে বিক্রির বিষয়টি প্রথম শুনলাম। তবে, প্রিজম ফাউন্ডেশন বর্জ্যগুলো যেখানে নিয়ে যাচ্ছে, সেখান থেকে সরছে কিনা দেখার বিষয়।
এদিকে, প্রিজম ফাউন্ডেশনের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা বর্জ্য নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও তা অরক্ষিতভাবে ডাস্টবিনে ফেলে রাখা হচ্ছে। এসব উপকরণ সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত না করেই পুনঃব্যবহারের ফলে এইচআইভিসহ মারাত্মক সব সংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়ছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. বেনজির আহমেদ জানান, মেডিকেল বর্জ্য এভাবে কারও কাছেই বিক্রি করা যাবে না। যদি এমনটা হয় তাহলে মারাত্মক সংক্রামক ছড়িয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া এই বর্জ্যগুলো রিসাইকেল করে আবার বিক্রি করলেও ঝুঁকি আছে।
পরিবেশবিদরা বলছেন, অবৈধভাবে মেডিকেল বর্জ্য কেনা-বেচার কারণে কেবল পরিবেশের ক্ষতি কিংবা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতেই পড়তে হচ্ছে না বরং এটি চরম অপরাধ। তাই শুধু আইন করে নয়, অবৈধ সিন্ডিকেটের সদস্যদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
আর.এইচ/ আই.কে.জে
খবরটি শেয়ার করুন