ছবি : সংগৃহীত
বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের কষ্টের সীমা নেই। এ সময় চারদিক পানিতে ভরে উঠলেও সংকট তৈরি হয় খাবার পানির। বিশুদ্ধ পানির অভাবে বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষ আক্রান্ত হতে শুরু করে নানা রোগে। তাই আসুন জেনে নিই, বন্যাদুর্গত এলাকায় পানি বিশুদ্ধকরণের সবচেয়ে সহজ উপায় সম্পর্কে।
সাধারণত পানি বিশুদ্ধকরণের দুটি উপায় বেশি জনপ্রিয়। একটি পানি ফুটিয়ে, অন্যটি ফিল্টার করে। কিন্তু বন্যাদুর্গত এলাকায় পানি ফুটানো বা ফিল্টার করা কোনোটাই সম্ভব হয়ে ওঠে না।
অনেকেই বন্যাদুর্গত এলাকায় নিরাপদ খাবার পানি সরবরাহের জন্য বিভিন্ন কোম্পানির ট্যাবলেটের ব্যবহারকে বেশি প্রাধান্য দেন। কিন্তু প্রয়োজনের সময় পানি বিশুদ্ধকরণের ট্যাবলেটও সহজে মেলে না। তাহলে কী করবেন, জানেন কী?
দ্রুত ও সহজ উপায়ে পানি বিশুদ্ধ করতে বেছে নিতে পারেন ক্লোরিন ও পটাশের ব্যবহারকে। ক্লোরিন বা পটাশের ব্যবহার পানিতে থাকা রোগ-জীবাণু দ্রুত ধ্বংস করতে পারে।
ক্লোরিন ও পটাশের নাম শুনে হয়তো ভাবছেন সহজে এগুলো কীভাবে হাতের কাছে পাবেন? তাহলে জেনে নিন, ক্লোরিনের একটি ভালো উৎস ব্লিচিং। আর পটাশের সবচেয়ে ভালো উৎস ফিটকিরি। এবার জেনে নিন, পানি বিশুদ্ধকরণের জন্য ব্লিচিং বা ফিটকিরি কীভাবে ব্যবহার করবেন?
প্রথমেই জেনে নিন, খাওয়ার জন্য নিরাপদ করতে পানি প্রথমে চুলার তাপে ফুটতে দিন। পাত্রে বলক এলেই চুলা বন্ধ করে দেবেন না। বরং এ সময়টাতেই ১ থেকে ৩ মিনিট পানি গরম করে নিন। এতে পানিতে থাকা জীবাণু ও ভাইরাস ধ্বংস হওয়ার সুযোগ পাবে।
কিন্তু বন্যার্ত এলাকায় পানি ফুটানোর সুযোগ নেই। তাই সাধারণ পানিতেই ব্লিচিং বা ফিটকিরি ব্যবহার করে পানিকে পানের উপযুক্ত করুন।
আরো পড়ুন : লবঙ্গ চিবিয়ে না খেয়ে এই ভুলগুলো করছেন নাতো?
১। ব্লিচিং: সাধারণত প্রতি ৩ লিটার পানিতে ১টি পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করা যায়। তবে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট না পেলে ১০ লিটার পানিতে ১০ মিলিগ্রাম (১ লিটারের জন্য ১ মিলিগ্রাম) ব্লিচিং গুলিয়ে রেখে দিন। ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করলেই খাওয়ার উপযুক্ত বিশুদ্ধ পানি পাবেন।
ব্লিচিং দিয়ে পাওয়া নিরাপদ পানির সমস্যা হলো এ পানিতে ব্লিচিংয়ের একটি গন্ধ থেকে যায়। এ সমস্যা দূর করতে ঢাকনা খুলে পাত্রে রাখা পানি কাঠি দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়ুন। কিছুক্ষণ পরপর নাড়াচাড়া করলেই পানিতে থাকা ব্লিচিংয়ের গন্ধ বাতাসে মিশে যাবে।
২। ফিটকিরি: বন্যাদুর্গত এলাকায় পানি বিশুদ্ধকরণের সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ফিটকিরি দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করা। এক কলসি পানিতে সামান্য পরিমাণ ফিটকিরি মিশিয়ে অপেক্ষা করুন ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা।
দেখবেন ফিটকিরি পানিতে থাকা সব ময়লাকে একত্র করে তলানিতে জড়ো করেছে। এই মুহূর্তে উপরের পানি ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে আলাদা পাত্রে রাখুন খাওয়ার জন্য। আর তলানিতে থাকা পানি ফেলে দিন। এ পদ্ধতিতে বন্যা দুর্গত এলাকায় খুব সহজে কম সময়ে বিশুদ্ধ পানি তৈরি করা যায়। দীর্ঘসময়ের জন্য তা সংরক্ষণও করা যায়।
এস/ আই.কে.জে/