বুধবার, ১২ই মার্চ ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৮শে ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আলস্যই ওষুধ!

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১১:২৭ পূর্বাহ্ন, ১২ই মার্চ ২০২৫

#

প্রতীকী ছবি

এই নিরাময় পদ্ধতির মূল কথা হলো ‘বিছানাই ভালো থাকার আশ্রয়’। তাই মনে কোনও পাপবোধ না রেখে ঘুম আর বিশ্রামকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। একইভাবে  কাজের কথা, অন্য সব চিন্তা ছেড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিছানায় পড়ে থাকতে হবে।

কাজে একেবারেই মন বসছে না? মনে হচ্ছে, অফিস থেকে ছুটি নিয়ে ক’টা দিন বাড়িতে নিজের বিছানায় চুপচাপ পড়ে থাকতে পারলে একটু ভালো হত? কাজ, অফিসের চাপ, লক্ষ্যপূরণের তাগিদ কোনও কিছু নিয়ে ভাবতে না হলেই মনটা একটু ভারমুক্ত হত! এমন ইচ্ছে শুনে কেউ বলতেই পারেন, এ আসলে কাজ না করার বাহানা। আবার কেউ এ-ও বলতে পারেন, শরীরে কোনও সমস্যা হলে বিছানায় গড়িয়ে লাভ কী? তার থেকে রোগের চিকিৎসা করানো দরকার। কিন্তু একটি তত্ত্ব বলছে, বিছানায় পড়ে থেকে আলস্য ভরে দিন কাটিয়ে দেওয়াও একটা ‘থেরাপি’ বা নিরাময় পদ্ধতি। আলস্যের ওই থেরাপি ইতোমধ্যে বিশ্বজু়ড়ে জনপ্রিয় হতেও শুরু করেছে।

এই হঠাৎ জনপ্রিয় হওয়ার ঘটনাটিকে বলা হয় ‘ট্রেন্ড’। মাঝে মাঝেই দেখা যায়, কোনও একটি বিষয় নিয়ে দেদার হইচই শুরু হয়েছে। সবাই সেই হইচইয়ে মেতেছেন। যত দিন যাচ্ছে হইচই বে়ড়েই চলেছে। যেন ছোট ছোট ঢেউ মিলে বড় ঢেউ তৈরি করছে। এ-ও সেই রকম। যার পোশাকি নাম ‘ট্রেন্ড’। বিশ্বজুড়ে কখন কোন ট্রেন্ড তৈরি হচ্ছে, তাতে নজর রাখার সংস্থাও রয়েছে। তেমনই এক সংস্থা ডব্লুজিএসএন ওই ট্রেন্ডের আগাম ঘোষণা করেছে। তারা জানিয়েছে, ২০২৫ সালে ক্রমশই জনপ্রিয়তা বাড়ছে ‘আলস্য থেরাপি’র।

আলস্য থেরাপি:

বিশ্রাম পর্বে ফোনে সমাজমাধ্যমের দেওয়ালে চোখ রাখাও চলবে না। মোট কথা মনকে সব রকম ভাবনা থেকে মুক্ত রাখতে হবে। একদিন বা একাধিক দিন ধরে এ ভাবেই কাটিয়ে দিলে মন এবং শরীরের ক্লান্তিবোধ কাটবে। কাটবে একঘেঁয়েমি। কয়েকদিন পরে আবার পূর্ণোদ্যমে কাজে ফিরতে পারবেন আপনি। এটা নতুন ‘আলস্য ট্রেন্ডের’ মূল ধারণা। 

আলস্য থেরাপি কতটা ফলপ্রসূ:

আলস্য থেরাপি কিছুটা কার্যকরী বলেই জানাচ্ছেন স্নায়ুরোগের চিকিৎসক কদম নাগপাল। তিনি বলছেন, ‘ভাবনাহীন আলস্য মাথা ঠাণ্ডা করে। মানসিক চাপ কমায়। বিশ্রাম পেয়ে মস্তিষ্কও গা ঝাড়া দিয়ে ওঠে।’ কিন্তু দীর্ঘদিনের আলস্য শরীর ও মস্তিষ্কের উপর নেতিবাচক প্রভাবও ফেলতে পারে বলে জানাচ্ছেন নাগপাল।

আলস্য থেরাপির নেতিবাচক দিক:

মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য আলস্য থেরাপি স্বল্প সময়ের প্রতিকার হলেও তার ফল দীর্ঘমেয়াদি হয় না বলে মনে করেন চিকিৎসক নাগপাল। তিনি বলছেন, ‘মন ও শরীর ভালো রাখার জন্য আমরা সাধারণত যা যা করি, যেমন যোগাসন, শরীরচর্চা বা ধ্যান, প্রাণায়ম ইত্যাদি, তা আমাদের এনডরফিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। মেজাজ ভালো রাখে। মানসিক স্বাস্থ্যও দীর্ঘমেয়াদে উন্নত করে। উল্টো দিকে, দীর্ঘদিন আলস্য ভোগ করলে তা শরীর ও মনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। যে রুটিনে আমরা অভ্যস্ত তাতে ফিরতে অসুবিধা হতে পারে। নষ্ট হতে পারে কাজ করার ক্ষমতাও। ’

আলস্য থেরাপি কি করা উচিত:

মন খারাপ হলেই আলস্যের শরণ নেওয়ার বদলে মাঝে সাঝে একদিন এমন ছোট বিশ্রাম নেওয়া যেতে পারে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসক। তবে তিনি বলছেন, বিষয়টিকে অভ্যাসে পরিণত না করাই মঙ্গল।

 কেসি/এইচ.এস


ওষুধ

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন