ছবি: সংগৃহীত
সারাদিন পর্যাপ্ত পানি পান না করলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। বেশি পানি পান করার অভ্যাসও শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। অতিরিক্ত পানি কিডনি ছেঁকে বের করতে পারবে না। ফলে কোষে কোষে এই পানি জমে শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি করবে।
বেশি পানি পান করলে কমে যেতে পারে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা। এমনকি প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি খেলে কিছুক্ষেত্রে মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়ে। চিকিৎসার পরিভাষায় একে ‘ওয়াটার ইনটক্সিকেশন’ বলে।
পানি বেশি পান করা ক্ষতিকর কেন
বিশেষজ্ঞদের মতে, পিপাসা না পেলেও কেউ যদি অল্প সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত পানি খেতে শুরু করে দেন তাহলে তার রক্তে সোডিয়ামের ঘনত্ব দ্রুত কমতে থাকবে। এক-আধ দিনের অভ্যাসে ক্ষতি নেই। কিন্তু প্রতিদিনই যদি ঘণ্টায় ঘণ্টায় লিটার লিটার পানি বা তরল খাবার কেউ খেতে শুরু করেন, তাহলে তা বিপজ্জনক হতে পারে।
তেমন কোনো রোগব্যাধি না থাকলে, একজন সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সারা দিনে ৩ থেকে ৪ লিটার পানি খাওয়া জরুরি। এটিও নির্ভর করে তিনি কতটা পরিশ্রম করছেন তার ওপরে। কোনো ব্যক্তি যদি দিনে ৬ থেকে ৭ লিটার পানি পান শুরু করেন এবং কায়িক পরিশ্রমও কম করেন, তখন তা শরীরের ক্ষতি করবে। রক্তে সোডিয়াম ও অন্য খনিজ লবণের মাত্রা কমে যাবে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে ‘হাইপোন্যাট্রেমিয়া’ বলে। এই অবস্থা তৈরি হলে শরীরের নানা অঙ্গের কার্যক্ষমতা কমতে থাকবে।
আরও পড়ুন: থাইরয়েডের জন্য ৫টি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস
চিকিৎসকের মতে, শরীরের প্রতি কোষেরই নির্দিষ্ট ধারণক্ষমতা থাকে। এর বেশি হয়ে গেলে তখন শরীরে প্রদাহ শুরু হবে। অতিরিক্ত পানি শরীরে জমতে থাকলে হাত-পা, গোড়ালি ফুলতে শুরু করবে। পেটে পানি জমতে থাকবে, যা চাপ দেবে যকৃৎ ও পাকস্থলীকে। এর জেরে শরীরে পানি ও লবণের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে। দেখা দেবে হরমোনের সমস্যাও।
কে, কতটা পরিমাণ পানি খাবেন, তা নির্ভর করবে সেই ব্যক্তির ওজন, শারীরিক সক্রিয়তা এবং সামগ্রিক কাজকর্মের ওপর। তেমন কোনো শারীরিক জটিলতা না থাকলে সারা দিনে ২ থেকে ৩ লিটার পর্যন্ত পানি পান করা যায়। তবে, ঘণ্টায় ১ লিটারের বেশি পানি না খাওয়াই ভালো।
মানুষের শরীরে ৫০-৬০ ভাগ পানি থাকে। পানি, খনিজ লবণ ও ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় থাকলেই শরীর সুস্থ ও তরতাজা থাকে। এই ভারসাম্য যদি নষ্ট হলে বিভিন্ন অসুখবিসুখ দেখা দিতে থাকে। বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্টও হতে পারে। তাই পানি পানের পরিমাণ নিয়ে সতর্ক থাকুন।
এসি/ আই.কে.জে/