ছবি : সংগৃহীত
আমাদের সবচেয়ে বড় বন্ধু আবার বলতে পারেন শত্রু হলো মন। যা সমস্যা তৈরি থেকে সমাধানের এক বিস্ময়কর হাতিয়ার। মন ভালো থাকলে যেমন সফলতা আসে তেমনই মন খারাপের প্রভাব পড়ে নিত্যকাজের ওপর। মন খারাপ থেকে সৃষ্টি হয় উদ্বেগ যা পৌঁছাতে পারে ডিপ্রেশনেও।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা আমাদের মানসিক চাপ তৈরি করে। এমন অতিরিক্ত চিন্তা দূর করে মনকে শান্ত করার কিছু প্রাচীন জাপানি কৌশল রয়েছে। সেগুলো মানলে পাবেন অতিরিক্ত চিন্তা থেকে মুক্তি। চলুন জেনে নিই সেই কৌশলগুলো।
‘শিরিন-ইয়োকু’
মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে প্রাকৃতিক জগতের শান্ত পরিবেশে নিজেকে নিয়ে যান। ‘শিরিন-ইয়োকু’ বা ‘ফরেস্ট বাথিং’ হল আমাদের ডিজিটাল জটিল অংক থেকে বেরিয়ে প্রকৃতির সতেজ শ্বাস গ্রহণ। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, সবুজের মধ্যে সময় কাটালে স্ট্রেস হরমোন কমে যায়। ফলে মন শান্ত হয় এবং শান্ত চিন্তার পরিবেশ তৈরি করে। তাই অতিরিক্ত চিন্তা আসলে পার্কে হাঁটাহাঁটি করুন বা তাজা বাতাসে শ্বাস নিন। দেখবেন ঝরঝরে পাতাগুলো আপনার মনে প্রশান্তি এনে দেবে।
শোগানাই
‘শোগানাই’ ধারণাটি বাংলায় অনুবাদ করলে দাঁড়ায় ‘এটি সাহায্য করবে না’। যার সহজ অর্থ আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে যা রয়েছে তার একটি সচেতন গ্রহণযোগ্যতা। যখন আমরা মেনে নিতে পারি, অতিরিক্ত চিন্তা অতীতের ঘটনাগুলোকে পরিবর্তন করবে না বা ভবিষ্যতের ফলাফলগুলোকেও নিয়ন্ত্রণ করবে না, তখন মানসিক দৃঢ়তা শিথিল হয়ে যায়। ‘যদি এমন হতো’ বাদ দিয়ে আমরা যখন ভাববো যা হয়ে গেছে তা আর ফিরবে না, তাহলে অতিরিক্ত চিন্তা আসবে না।
আরো পড়ুন : চেহারা থেকে সরবেই না প্রিয় মানুষের নজর, রইলো টিপস
নেনবুতসু
‘ওম’ বা ‘নমস্তে’ এর মতো শব্দ যা বারবার বললে মৃদু তরঙ্গের সৃষ্টি হয় তাই নেনবুতসু। এটি একটি সহজ অভ্যাস। এ ধরণের শব্দ বা মন্ত্র বারবার পড়ার ফলে আপনার অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা বাধাগ্রস্ত হবে। যার কারণে আপনার অতীতের চিন্তা মাথা থেকে দূর হবে। আর বর্তমান কাজে মনোযোগ আসবে। উচ্চস্বরে বা নীরব, যেভাবেই হোক নেনবুতসু অভ্যন্তরীণ শান্তি এবং মানসিক স্থিরতার জন্য একটি উপকারী প্রক্রিয়া।
জাজেন
বসে ধ্যান করার অনুশীলন হল ‘জাজেন’। যা আমাদের চিন্তাভাবনাগুলো পর্যবেক্ষণ করে অতিরিক্ত চিন্তা ও মানসিক চাপকে কমিয়ে দেয়। এই ধ্যান আমদের অতিরিক্ত চিন্তাভাবনাকে ধীরে ধীরে দুর্বল করে ফেলে। তাই মনকে শান্ত করতে জাজেন করতে পারেন।
গামন
‘গামন’ হল, ‘সহনশীলতা’ বা ‘অধ্যবসায়’। এটি অতিরিক্ত চিন্তাভাবনাকে দূর করে দেয়। সহনশীলতা মানুষকে পরিস্থিতির আলোকে মানিয়ে নিয়ে সহায়তা করে। তাই নিজের মধ্যে সহনশীলতা কম থাকলে তা বাড়িয়ে ফেলুন খুব দ্রুত। আশা করা যায় অল্প সময়েই অতিরিক্ত চিন্তা থেকে মুক্তি পাবেন। আর চিন্তামুক্ত হয়ে কাজে মন দিলে সফলতা আসবে অতি শিগগির।
ওয়াবি-সাবি
‘ওয়াবি-সাবি’ হল বিভিন্ন সৌন্দর্য ও দর্শনীয় জায়গাগুলো ঘুরে দেখা। এ ধরণের ভ্রমণ আমাদের মনকে নির্দিষ্ট চিন্তা থেকে মুক্ত করে। মনের অতিরিক্ত চিন্তা যখন ভেঙে যায় তখন দুশ্চিন্তাও কমে যায়। বিভিন্ন দর্শনীয় ও সৌন্দর্য দেখলে তা আমাদের চিন্তা ও আবেগের স্বাভাবিক ভাটা এবং প্রবাহকে আলিঙ্গন করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। আমরা অনিয়ন্ত্রিতকে নিয়ন্ত্রণ করার চাপ ছেড়ে দিই এবং বর্তমান মুহুর্তে গ্রহণযোগ্যতা খুঁজে পাই।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
এস/ আই. কে. জে/
খবরটি শেয়ার করুন