ছবি: সংগৃহীত
মিয়ানমারের স্থানীয় প্রতিরোধ গোষ্ঠী নাটোগি গেরিলা ফোর্স (এনজিএফ) রবিবার মান্দালয় অঞ্চলের নাটোগি টাউনশিপে চীন-সমর্থিত তেল ও গ্যাস পাইপলাইনের জন্য একটি অফ-টেক স্টেশন পাহারা দেওয়া জান্তা সৈন্যদের উপর আক্রমণ চালায়। গত বছরের পর এটা তাদের দ্বিতীয় আক্রমণ।
স্টেশনটি নাটোগি থেকে প্রায় ৫ কিমি পূর্বে অবস্থিত এবং প্রায় ২০ জন জান্তা সৈন্য এ স্টেশন পাহারা দিচ্ছেন। গত রবিবার, রাত সাড়ে ৮ টার দিকে এনজিএফ এ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে হামলা চালায়।
দলের সদস্য বো জেয়ার বলেন, ৭ মে কন্ট্রোল সেন্টারে তিনটি ৬০ মিমি রকেট নিক্ষেপ করা হয়। রকেটগুলো ভবনে আঘাত হানে। এতে দুই জান্তা সৈন্য নিহত এবং পাঁচজন আহত হয়েছেন।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে, স্থানীয় প্রতিরোধ গোষ্ঠী এই একই স্টেশনে হামলা চালিয়েছিল।
রাখাইন উপকূল থেকে দক্ষিণ চীন পর্যন্ত চলমান তেল ও গ্যাস পাইপলাইনগুলো ২০১১ সালে নির্মিত হয় এবং ২০১৩ সালের জুলাইয়ে কাজ শুরু করে।
৯৭৩ কিলোমিটার পাইপলাইনগুলো ম্যাগওয়ে এবং মান্দালয় অঞ্চল এবং শান রাজ্যের মধ্য দিয়ে চীনের ইউনান প্রদেশে যায়।
এই মাসের গোড়ার দিকে মিয়ানমারের জান্তা নেতা মিন অং হ্লাইং এর সাথে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং এর বৈঠকের সময় এই হামলা হয়। এ বৈঠকে চীনা কর্মকর্তা দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে, অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং টেকসই উন্নয়ন ঘটানোর জন্য মিয়ানমারের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে। মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমার সরকারে সাথে দেখা করতে আসা প্রথম শীর্ষ পর্যায়ের চীনা সরকারী কর্মকর্তা হলেন কিন। জান্তা তার শাসনের বিরোধিতা করে তাদের দমন অভিযানে এ পর্যন্ত ৩,৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে।
কিনের মিয়ানমার সফরের পর, ইয়াঙ্গুন এবং সাগাইং অঞ্চলের ইয়ানমাবিন, সালিংই এবং লেতপাডাউং এ চীন বিরোধী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে চীনা পতাকা পোড়ানো হয়।
মিয়ানমারের প্রধান বিনিয়োগকারী দেশ হলো চীন। ভারত মহাসাগরে প্রবেশাধিকার প্রদানের জন্য পরিকল্পিত খনি, তেল-গ্যাস পাইপলাইন এবং অবকাঠামো প্রকল্পগুলোতে প্রচুর গুরুত্ব প্রদান করে চীন।
রবিবারের হামলার কথা উল্লেখ করে বো জেয়ার বলেন, "সম্প্রতি চীন সরকার এবং কমিউনিস্ট পার্টি যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা সমগ্র মিয়ানমারের জনগণকে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে। চীন সরকার যদি সামরিক বাহিনী এবং যুদ্ধাপরাধীদেরকে সমর্থন করে, তাহলে তারাও সন্ত্রাসীদের সহযোগী হিসেবেই গণ্য হবে।"
হামলার পর ঐ জায়গার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং সেখানে প্রায় ৮০ জন জান্তা সৈন্যকে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।
খবরটি শেয়ার করুন