সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাপানের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির পরিকল্পনায় উদ্বিগ্ন চীন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৪:৩৩ অপরাহ্ন, ১৩ই মে ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

গত বছর জাপান ঘোষণা দেয়, আগামী ৫ বছরে তারা সামরিক ব্যয় দ্বিগুণ করবে এবং শত্রু ঘাঁটিতে হামলা করার ক্ষমতা অর্জন করবে। এ ঘোষণার পর চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং জাপানকে তার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর নেওয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের জন্য কটাক্ষ করেন।

জাপানকে তার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরাজয়ের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে কিন গ্যাং বলেন, যুদ্ধোত্তর আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা অবশ্যই বজায় রাখা উচিত। মূলত ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আগ্রাসী সামরিক অবস্থানের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচিত দেশ চীন। এই অঞ্চলে জাপানের সামরিক গঠন নিয়ে মূলত চিন্তিত দেশটি।

জাপান প্রথমবারের মতো দেখিয়ে দিয়েছে যে কীভাবে তার সামরিক বাহিনী বিমান উপগ্রহ, সাবমেরিন, গ্লাইড বোমা, হাইপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ফাইটার জেট সহ সমন্বিত অস্ত্রের মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বীদের ধ্বংস করে দিতে পারে।

জাপানের প্রতিরক্ষা বাহিনী আক্রমণাত্মক আচরণের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে যে জাপানের ডানপন্থী বাহিনী যুদ্ধোত্তর ব্যবস্থা ভেঙে ফেলছে এবং আঞ্চলিক পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করেছে। এটি আঞ্চলিক সামরিক ভারসাম্য এবং কৌশলগত স্থিতিশীলতার উপর গুরুতর প্রভাব ফেলবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। 

জাপানের প্রতিরক্ষা বাহিনীর জন্য সর্বশেষ প্রতিরক্ষা ব্যয় প্যাকেজ, গত বছরের ডিসেম্বরে অনুমোদিত হয়। এর জন্য মোট ৬.৮ ট্রিলিয়ন ইয়েন (৫২০ কোটি মার্কিন ডলার) ধরা হয়েছে, যা দেশটির আগের বাজেটের তুলনায় প্রায় ২৬ শতাংশ বেশি।

জাপানের বর্তমান প্রতিরক্ষা বাজেট, এপ্রিলের শুরুতে উন্মোচিত হয়। এটি দেশের জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলের অধীনে প্রথম পদক্ষেপ। 

জাপানের নতুন জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল বা এনএসএস, ২০২৭ সালের মধ্যে দেশের প্রতিরক্ষা ও অন্যান্য ব্যয়কে জিডিপি এর ২ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর উপর জোর দেয়। 

দেশটি আক্রমণের ক্ষেত্রে শত্রু ঘাঁটিতে আঘাত করার জন্য দূরপাল্লার ক্ষমতা অর্জন করবে বলে চীন মনে করে যে কোনো সংঘাত শুরু হলে জাপান তার প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তাছাড়া চীনকে বড় সামরিক শক্তিতে পরিণত হতে গেলে জাপানের সমস্ত বাধাকে অতিক্রম করতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, তাইওয়ান দ্বীপে চীনের আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে তাইওয়ানকে রক্ষা করার জন্য জাপান মার্কিন বাহিনীকে সমর্থন করবে।

জাপানের জন্য, তাইওয়ান কৌশলগতভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশ। চীন তাইওয়ান আক্রমণ করলে পিএলএ ওকিনাওয়াতে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতেও আক্রমণ চালাতে পারে। তখন জাপানকে চীনের সাথে যুদ্ধে জড়াতে হবেই।

১৮ মার্চ, জাপানের ওকিনাওয়া কর্তৃপক্ষ তার প্রথম সিমুলেটেড অনুশীলন চালায় এবং তাইওয়ানের কাছাকাছি অবস্থিত ইয়োনাগুনিসহ বিভিন্ন দ্বীপ থেকে প্রায় ১ লাখ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেয়।

তাইওয়ান থেকে ৩৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সাকিশিমা দ্বীপপুঞ্জের শহরগুলো সহ বেশ কয়েকটি শহরে জাপানি কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ মহড়া চালিয়েছে।

জানা যায়, ওকিনাওয়ার ছোট ছোট দ্বীপের বাসিন্দাদের প্রথমে ইশিগাকি এবং মিয়াকোর মতো বড় দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তারপর ওকিনাওয়ার প্রধান দ্বীপ কিউশুতে স্থানান্তরিত করা হয়। 

এই ধরনের সতর্কতামূলক বেসামরিক মহড়ার পাশাপাশি, জাপান প্রতিরক্ষা সক্ষমতা জোরদার করছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ফিলিপাইনের সাথে সহযোগিতা আরো জোরদার করছে। এই বছরের মার্চ থেকে জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে।

১২ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো দুই দেশের মধ্যে একটি আনুষ্ঠানিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত মাসে, দুই দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গত পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো একটি নিরাপত্তা সংলাপে বসে।

Important Urgent

খবরটি শেয়ার করুন