ছবি : সংগ্রিহিত
গাজর একটি শীতকালীন সবজি। তবে এখন প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়। বলতে গেলে পা থেকে মাথা পর্যন্ত প্রতিটি অঙ্গের জন্য প্রয়োজনীয় এই সবজি। শুধু তাই নয়, হরমোনের সমস্যা থেকে ওজন নিয়ন্ত্রণ, সবই করতে পারে গাজর। তাই চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদ, সবারই পছন্দের সবজি গাজর।
২০২১ সালে নিউট্রিয়েন্টসে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, অন্যান্য সবজির তুলনায় গাজর কম বডি মাস ইনডেক্স ও স্থূলতার কম হারের সঙ্গেও যুক্ত। এছাড়া গাজরে ক্যালোরিও কম। এক কাপ কাটা গাজরে মাত্র ৫২ ক্যালোরি।
২০২২ সালের একটি গবেষণা অনুসারে, একই সঙ্গে গাজরে লাইকোপেন নামক আরেকটি ক্যারোটিনয়েডও থাকে। লাইকোপিনের পাকস্থলী, প্রোস্টেট, ফুসফুস ও স্তন ক্যানসারের মতো ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা আছে।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালে প্রকাশিত ২০২০ সালের গবেষণায় দেখা গেছে, অন্যান্য ফল ও শাক সবজির মধ্যে গাজর কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় উপকারী।
২০১৯ সালে ফুডস জার্নালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, গাজরে থাকা ফেনোলিক যৌগগুলো কার্ডিওভাসকুলার রোগ কমাতে সক্ষম। এই যৌগগুলোতে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য আছে, যা স্বাভাবিক রক্তে শর্করা ও কোলেস্টেরলের মাত্রা বজায় রাখতে সহায়তা করে।
গাজরে থাকা ভিটামিন সি আপনার ইমিউন সিস্টেমকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এমনটিই বলছে ফুডসে প্রকাশিত ২০১৯ সালের নিবন্ধ। এতে বলা হয়, গাজরে দুটি ভিটামিনের কথাও উল্লেখ করেছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য উপকারী ভিটামিন সি ও ভিটামিন এ আছে।
গাজরে থাকা প্রাকৃতিক যৌগগুলো প্রদাহ বিরোধী হিসেবে কাজ করতে দেখা গেছে। তাদের মধ্যে একটি হলো লুটেইন। এটিও একই অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা রেটিনাকে ম্যাকুলার অবক্ষয় থেকে রক্ষা করে। যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতার সঙ্গেও জড়িত থাকতে পারে।
আরো পড়ুন : শীতের সকালে ঘুম থেকে সহজে ওঠার উপায়
নিউট্রিয়েন্টসে প্রকাশিত একটি ২০২১ সমীক্ষা পরামর্শ দেয়, প্রাপ্তবয়স্কদের মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উপর লুটেইন উপকারী প্রভাব ফেলে। গাজরে থাকা ‘ফ্যালক্যারিনল’ জরায়ু বা ডিম্বাশয়ের ক্যানসার, সিস্ট, ফাইব্রয়েডসের মতো সমস্যাগুলোকেও নিয়ন্ত্রণে রাখে।
গাজর যেভাবে খাবেন-
পুষ্টিবিদদের মতে, গাজর ভালো করে ধুয়ে, কেটে সালাদ হিসেবে খেলে তার মধ্যে থাকা ‘ফ্যালক্যারিনল’ পুরো মাত্রায় থাকবে। অন্যদিকে তাপের সংস্পর্শে এলে গাজরের মধ্যে থাকা ‘বিটা ক্যারোটিন’এর পরিমাণ বাড়ে।
যা চোখ ও চুলের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। যদি কেউ গাজরের রস খেতে চান, তাহলে কয়েক ফোঁটা নারকেল তেল মিশিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে অন্ত্রের কোনো সমস্যা থাকলে গাজর কাঁচা না খাওয়াই ভালো। খেয়াল রাখতে হবে কোনো সবজিই যেন অতিরিক্ত সেদ্ধ না হয়। সেক্ষেত্রে পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে পারে।
সূত্র: হেলথ.কম
এস/ এস/ আই.কে.জে/