রবিবার, ২৩শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১১ই ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যেসব যন্ত্রের কারণে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে, কিভাবে কমাবেন খরচ

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৫:৫৬ অপরাহ্ন, ২২শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫

#

প্রতীকী ছবি (সংগৃহীত)

শীতকে বিদায় দিয়ে আসছে গরম। আর এই গরমে অনেকের বাসায় সারা দিন ফ্যান চলে। কেউ কেউ ব্যবহার করেন এয়ারকন্ডিশনার বা এসি। কমবেশি সব বাসাতেই বর্তমানে রেফ্রিজারেটর রয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে মাস শেষে বিদ্যুৎ বিল দেখে চোখ কপালে ওঠে। এত বিল কীভাবে হলো! বিদ্যুৎ বিলের খরচ কমাতে হয়তো অনেকে লাইট, ফ্যান বন্ধ করে রাখেন। কিন্তু লাইট, ফ্যানের চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ খরচ হয় এমন কয়েকটি যন্ত্র আমাদের বাসাবাড়িতেই আছে। চলুন সে রকম চারটি যন্ত্র সম্পর্কে জানা যাক। পাশাপাশি শিখে নেওয়া যাক এগুলোর বিদ্যুৎ খরচ কমানোর উপায়-

ওয়াশিং মেশিন

বাসাবাড়িতে ওয়াশিং মেশিন এখন নিত্যব্যবহার্য পণ্যে পরিণত হয়েছে। জামা পরিষ্কার ও শুকানোর জন্য অনেক শক্তি খরচ হয়। আর শক্তি খরচ হওয়া মানেই তো বিদ্যুৎ খরচ।

যেভাবে খরচ কমাবেন

১. প্রতিবার ওয়াশিং মেশিন ভরে কাপড় দিয়ে একসঙ্গে ধুয়ে ফেলুন। মেশিনে কাপড় কম দিয়ে বারাবার ধুলে বিদ্যুৎ খরচ বেশি হবে। এতে পানি খরচও বাঁচবে।

২. গরম পানির পরিবর্তে ঠান্ডা পানি দিয়ে কাপড় ধোয়ার চেষ্টা করুন। সাধারণত হাতে ধোয়ার সময় আমরা ঠান্ডা পানিই ব্যবহার করি। তাই ওয়াশিং মেশিনে ঠান্ডা পানি দিয়ে কাপড় ধুলে পানি গরম করা লাগবে না। এতে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে।

৩. কাপড় মেশিনে ধুয়ে প্রাকৃতিকভাবে শুকানোর ব্যবস্থা করুন। সূর্যের আলোয় কাপড় শুকান। খরচ বাঁচবে।

৪. উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন ওয়াশিং মেশিন কিনুন। এতে পানি ও বিদ্যুৎ কম খরচ হবে।

৫. ওয়াশিং মেশিন নিয়মিত পরিষ্কার করুন। ফিল্টার ও ড্রাম নিয়মিত পরিষ্কার না করলে বিদ্যুৎ খরচ বেশি হয়।

এয়ারকন্ডিশনার

এসিতে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ খরচ হয়। কারণ, এসি অনেক সময় চালিয়ে রাখতে হয়। তা ছাড়া এসি চালাতে অধিক ওয়াট শক্তি খরচ হয়। তাই বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে। তবে কিছু নিয়ম মানলে এসি চালিয়েও বিদ্যুৎ খরচ কমানো যায়।

আরো পড়ুন : মোটা হতে চাইলে যা খাবেন

যেভাবে খরচ কমাবেন

১. নতুন প্রযুক্তির এসি বেশি বিদ্যুৎ–সাশ্রয়ী। যেমন ইনভার্টার এসি। তাই ইনভার্টার এসি কেনার চেষ্টা করুন।

২. প্রতিবছর একবার এসির ফ্লুইড লেভেল, কুল্যান্ট চার্জসহ যাবতীয় বিষয় একজন ভালো ও দক্ষ টেকনিশিয়ানের মাধ্যমে পরীক্ষা করানো ভালো।

৩. এসির রুমে বাতাস যেন বাইরে থেকে ভেতরে বা ভেতর থেকে বাইরে যেতে না পারে। বাইরের গরম বাতাস ভেতরে ঢুকলে সেই বাতাস ঠান্ডা করতে বেশি বিদ্যুৎ খরচ হয়।

৪. এসির রুমে অপ্রয়োজনীয় জিনিস না রাখাই ভালো। প্রয়োজনীয় জিনিসও অন্য কোথাও রাখার চেষ্টা করুন। যেমন রেফ্রিজারেটর বা স্টিলের ওয়ার্ডরোব জাতীয় জিনিস এসির রুমে থাকলে সেগুলোকেও ঠান্ডা করতে হয়। এতে বেশি বিদ্যুৎ খরচ হয়। প্রতিবার এসি চালালে এগুলোও ঠান্ডা করতে হয়।

৫. প্রথমবার এসি চালিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ফ্যান চালিয়ে দিতে পারেন, যাতে এসির বাতাস চারদিকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। পরে ঘর ঠান্ডা হলে ফ্যান বন্ধ করে দেবেন।

এসব বিষয় মাথায় রাখলে এসি চালিয়েও বিদ্যুৎ খরচ কমানো যায়।

রেফ্রিজারেটর

রেফ্রিজারেটর এমন যন্ত্র, যা সব সময় চলতে থাকে। ২৪/৭ হিসেবে চলে বলে আপনার বাসার বিদ্যুৎ বিল বাড়ার অন্যতম কারণ এই রেফ্রিজারেটর। ওপরের তিনটি যন্ত্র আপনার বাসায় না থাকলেও এটা থাকার কথা। চলুন দেখে নিই কীভাবে ফ্রিজ ব্যবহার করেও খরচ কমানো যায়।

যেভাবে খরচ কমাবেন

১. যতটা সম্ভব নতুন প্রযুক্তির ফ্রিজ কিনুন। কারণ, আধুনিক প্রযুক্তির ফ্রিজে বিদ্যুৎ খরচ কম হয়।

২. ডিপ ফ্রিজে বরফ জমলে পরিষ্কার করে ফেলুন। বরফ জমলে ফ্রিজের কর্মদক্ষতা কমে যায়; কিন্তু বাড়ে বিদ্যুৎ খরচ।

৩. অনেক সময় ধরে টানা ফ্রিজের দরজা খুলে রাখবেন না। ফ্রিজে এমনভাবে জিনিসপত্র রাখুন, যাতে সহজে বের করতে পারেন।

৪. প্রয়োজন অনুসারে ফ্রিজের তাপমাত্রা বাড়িয়ে-কমিয়ে বিদ্যুৎ বিল বাঁচাতে পারেন। নরমালে ৩ থেকে ৫ ডিগ্রি ও ডিপে মাইনাস ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখতে পারেন।

৫. ফ্রিজে অতিরিক্ত খাবার রাখলে সবকিছু ঠান্ডা হতে বেশি সময় লাগে। তাই প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার কিনে না রাখাই ভালো।

ইলেকট্রিক ওভেন

খাবার গরম করার এই ওভেন লাইট বা ফ্যানের চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ খরচ করে। অল্প সময় ব্যবহার করলেও এটা চালাতে বেশি শক্তির বিদ্যুৎ লাগে। তাই বিদ্যুৎ বিল কমাতে চাইলে ইলেকট্রিক ওভেন ব্যবহারেও সাশ্রয়ী হতে হবে।

যেভাবে খরচ কমাবেন

১. প্রয়োজন না হলে ইলেকট্রিক ওভেনের পরিবর্তে গ্যাসের চুলা ব্যবহার করুন।

২. একবারে একটি খাবার গরম না করে একসঙ্গে একাধিক খাবার গরম করলে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে।

৩. কিছুক্ষণ ওভেন চালিয়ে খাবার গরম হলে বন্ধ করে রাখতে পারেন। তবে খাবার যতক্ষণ খাওয়া শুরু না করবেন, ততক্ষণ ওভেন থেকে বের করবেন না। ওভেনের মধ্যে থাকলে ওটার তাপে খাবার গরম থাকবে।

৪. সঠিক তাপমাত্রায় খাবার গরম করুন। অতিরিক্ত তাপমাত্রা সেট করলেই খাবার দ্রুত গরম হয় না; বরং বিদ্যুৎ খরচ বাড়ে শুধু।

৫. সম্ভব হলে আধুনিক ইনভার্টার প্রযুক্তির ওভেন কিনুন। এতে বিদ্যুৎ খরচ বাঁচবে।

সূত্র: অ্যাপ্লায়েন্সেস ডট কম, টাইমস অব ইন্ডিয়া, রিয়েল হোমস ডট কম

এস/ আই.কে.জে/ 

বিদ্যুৎ বিল

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন