ছবি: সংগৃহীত
দেশের ১৩৫টি সরকারি কলেজে যে নতুন অধ্যক্ষদের নিয়োগ দিয়েছে সরকার, সেই তালিকায় মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন নামের একজন মৃত অধ্যাপকের নামও এসেছে।
অধ্যাপক জামাল উদ্দিন গত বছরের ১৫ই মার্চ ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার (২৪) বাবা। মৃত্যুর দুই বছর পর অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন হলো সেই অবন্তিকার বাবা অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের।
২০২৩ সালে মৃত্যুর আগে অধ্যাপক জামাল উদ্দিন কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নতুন করে তাকে কুড়িগ্রামের সরকারি মীর ইসমাইল হোসেন কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। ঘটনাটি নেট দুনিয়ায় ‘ভাইরাল’ (আলোচিত) হয়েছে। নেটিজেনরা কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন। একই সঙ্গে অধ্যাপক জামাল উদ্দিনকে শোকের সঙ্গে স্মরণ করছেন তারা।
গতকাল মঙ্গলবার (৮ই এপ্রিল) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ পৃথক তিনটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এসব পদে নিয়োগ দেয়। এর মধ্যে দুটি প্রজ্ঞাপনে ৪৯ জন করে এবং আরেকটি প্রজ্ঞাপনে ৩৭ জনকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা জানানো হয়।
ওই তালিকায় অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের নাম থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন তার স্ত্রী তাহমিনা শবনম। বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘জীবিত থাকতে এ স্বীকৃতি তো আমার স্বামী পেলেন না।’
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের রংপুর অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক মো. আমির আলী বলেন, ‘বিষয়টি মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারিত হয়েছে। প্রয়াত শিক্ষক আগেই শূন্য পদে অধ্যক্ষ পদে পদায়ন বা বদলির আবেদন করেছিলেন। দুর্ভাগ্যজনক হলো, তিনি আগেই মারা গেছেন।’
অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের আরেকটি পরিচয় হলো, তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার বাবা। অবন্তিকা ২০২৪ সালের ১৫ই মার্চ রাতে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কুমিল্লার নিজ বাড়িতে আত্মহত্যা করেন। সে সময় এ ঘটনা সারাদেশে আলোচনার ঝড় তোলে।
সেই ফেসবুক পোস্টে অবন্তিকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী ও সহকারী প্রক্টর (সাময়িক বরখাস্ত) দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে হয়রানিসহ নানা অভিযোগ করেন। এতে আত্মহত্যার প্ররোচণার প্রাথমিক সংশ্লিষ্টতা পেয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় অবন্তিকার মায়ের করা মামলায়।
এইচ.এস/
খবরটি শেয়ার করুন