শুক্রবার, ২১শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৮ই ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে কারণে লেখালেখি করা উচিত সবার

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১১:৪২ পূর্বাহ্ন, ১৮ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

অনেকের মুখেই শোনা যায়, ‘আমি পেশাদার লেখক বা কবি নই, কিন্তু লিখতে ভালোবাসি; নিজের জন্যই লিখি মাঝেমাঝে’। হয়তো আপনি নিজেও এটা ভাবেন। কিন্তু কখনো কি নিজেকে প্রশ্ন করে দেখেছেন যে, আমরা, মানুষরা, কেন লিখতে ভালোবাসি? নিজের জন্য লিখি বলতে আসলে আমরা কী বোঝাই? চলুন একসঙ্গে ভেবে দেখা যাক বিষয়টি।

যারা লেখালেখিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন, অথবা নিজের লেখা গল্প-কবিতা-প্রবন্ধ পাঠকের জন্য প্রকাশ করেন, তারা যে নিজের জন্য লেখেন না, তা কিন্তু নয়। লিখতে যারা ভালোবাসেন, তাদের সবারই একটি সাধারণ অনুপ্রেরণা আছে। আর তা হলো নিজের চিন্তার জগতকে সংরক্ষণ করতে চাওয়ার আকাঙ্ক্ষা। নতুন একটি ভাবনা, কোনও উপলব্ধি, একটি নতুন অভিজ্ঞতা, মনে হয় এটি লিখে রাখি, যত্নে থাকুক। কোনও এক অলস দুপুরে নিজের লেখাগুলো পড়ে হয়তো আবার স্মৃতিতে হারিয়ে যান অনেকে।

এটি মানুষের খুব গভীর একটি চাওয়া – হারিয়ে না যাওয়ার বাসনা। প্রায় সবাই চান, ‘আমি না থাকলেও কেউ যেন আমায় মনে করে’। নিজের জন্য লেখাও মনের গভীর এই চাওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত। তবে লেখালেখির এই অভ্যাসের বেশকিছু প্রাত্যহিক ব্যবহার আছে। আবার জিজ্ঞেস করলে অনেকের কাছেই খুব বাস্তবসম্মত কিছু কারণও জানতে পারবেন। জেনে নিন এমন কিছু কারণ-

১. চিন্তা-ভাবনা গুছিয়ে নিতে

মাথায় অনেকগুলো বিষয় একসঙ্গে চলছে? কোনওটাতেই মন দিতে পারছেন না? একে একে লিখে ফেলুন ভাবনাগুলো। চোখের সামনে সবগুলো বিষয় থাকলে দেখবেন গুরুত্ব অনুযায়ী একটি একটি করে পরিকল্পনা করে ফেলতে পারছেন। আবার পরিকল্পনা করার ক্ষেত্রেও এই বিষয়টি কাজে দেবে। যারা নিয়মিত নিজেদের দৈনন্দিন জীবন নিয়ে লেখেন, বা ডায়রি লেখার অভ্যাস লালন করেন, তারা সাধারণত অর্গানাইজড হয়ে থাকেন। তাই আপনিও যদি নিজের জীবনটা আরেকটু গুছিয়ে যাপন করতে চান, তাহলে এই অভ্যাসটি দিয়ে শুরু করতে পারেন।

২. দৈনন্দিন তথ্য মনে রাখতে

লেখা যে সবসময় গল্প-কবিতা-প্রবন্ধই হয় তাও নয়। এখনকার প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে মনে রাখতে হয় কতকিছুই! বিভিন্ন ডিভাইস আর অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড থেকে শুরু করে বাজারের লিস্ট। যাদের সৃজনশীল লেখালেখির শখ আছে, তারা কিন্তু এসব ছোট ছোট তথ্যগুলোও লিখে রাখেন। এতে জীবন অনেকটাই সহজ হয়।

আরো পড়ুন : পায়ের গোড়ালি ব্যথায় আরাম পেতে জানুন ঘরোয়া উপায়

৩. মানসিক সুস্বাস্থ্যের জন্য

কোনও বিষয়ে খুব কষ্ট পেয়েছেন? বা এতই রাগ হয়েছে যে কিছুতেই ভুলতে পারছেন না? বিষয়টি লিখে ফেলুন। মনের যত কষ্ট, অভিমান, রাগ লিখে ফেললে দেখবেন নিজেকে হাল্কা লাগছে। সম্পর্কের উন্নতির জন্য এই লেখাগুলোকে আপনি চিঠির মতো করে কাছের মানুষকে দেখাতে পারেন, যেন তারা আপনার অনুভূতি আরো ভালো করে বুঝতে পারে। অথবা দেখাতে না চাইলে আপনি সংরক্ষণ করতে পারেন বা নষ্ট করে ফেলতে পারেন। যাই করেন না কেন, এটি আপনকে সাহায্য করবে নিশ্চিত। এটি পেশাদার সাইকোলজিস্টদের পরামর্শগুলোর একটি।

৪. অব্যক্ত কথার চাপ কমাতে

কত কথা কত মানুষকে বলবো ভেবে বলা হয়ে ওঠে না আমাদের। এক সময় আফসোস ছাড়া আর কিছু বাকি থাকে না। মুখে বলে উঠতে পারছেন না, কিন্তু মনের মধ্যে কথা জমা হয়েই চলেছে। কী করবেন? চিঠি লিখে ফেলুন। কোনও এক সময় হয়তো সেই চিঠি আপনার পাঠানোর ইচ্ছা হতেও পারে।

৫. সৃজনশীলতার চর্চা ধরে রাখতে

আপনার ভেতরকার সৃজনশীলতাকে লালন করুন শব্দের যত্নে। কোনও ভাবনা, উপলব্ধি, বিশ্লেষণ, গল্প, কবিতা বা গান। মুহূর্তের চিন্তাগুলোকে হারিয়ে যেতে না দিয়ে শব্দের মুক্তা দিয়ে গেঁথে ফেলুন তাদের। জীবনের কোনও এক ধাপে এই লেখাগুলো আপনার বড় আপন মনে হবে।

লেখালেখির অভ্যাসের গুণগান শেষ হওয়ার নয়। প্রত্যেকটি মানুষের জীবনে এর আলাদা আলাদা গুরুত্ব আছে। তবে গুরুত্ব যতটুকই হোক না কেন, উপকার ব্যতীত এর কোনো অপকার নেই।

এস/ আই.কে.জে/  


লেখালেখি

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন